রনি ইমরন
বাতাস যেন আগুনে ছোঁয়া আর সূর্যের নির্দয় তেজে হাঁসফাঁস করছে পাবনার জনজীবন।এপ্রিল মাস জুড়ে দীর্ঘ সময় মাঝারি থেকে তীব্র ও তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে পাবনায়। এমন টানা তাপদাহ স্মরণকালে দেখেনি পাবনার মানুষ।গতকাল মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল পাবনায় ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ।এপ্রিল মাস জুড়ে প্রতিদিনই পাবনায় তাপমাত্রা ৪০ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি বা এর উপর দিয়ে বয়ে গেছে। পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়,এপ্রিলে উল্লেখযোগ্য তীব্র তাপদাহ ছিল ২৯ এপ্রিল ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৬ এপ্রিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ এপ্রিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ,২০ এপ্রিল ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ,১৯ এপ্রিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ।প্রায় গত এক মাস আকাশে ছিটেফোঁটা মেঘ নেই , বৃষ্টির জন্য আকাশপানে তাকিয়ে থাকছে মানুষ ।ইতোমধ্যে পাবনার কয়েকটি স্থানে ও মসজিদে মহান আল্লার নিকটে বৃষ্টির জন্য ইস্তেখারার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাপদাহে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে ।পাবনা ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিন্টু জানায় , দোকানে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। দোকানে বিভিন্ন ফ্যানের পাশাপাশী রিচার্জেবল ফ্যানের ক্রেতা বেশী।এই রিচার্জেবল ফ্যানগুলো লোডশেডিং সময়ে গরম থেকে অনেক স্বস্তি দিয়ে থাকে।সাধারনত নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত ক্রেতারা বেশী আসছে ।আমরা মনবিক দিক বিবেচনা করে পণ্যর দাম সহনীয় পর্যায়ে বিক্রয় করছি,বলছিলেন মাসুদুর রহমান মিন্টু। তীব্র তাপদাহে কৃষক শ্রমিক দিনমজুর থেকে শুরু করে ঘড়ের গৃহিণীরা অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে। তাপপ্রবাহে মানুষ ছুটছে জীবন জীবিকার তাগিদে।পাবনা শহরের নির্মাণ শ্রমিক কায়য়ূম (৪৫) জানায় সূর্যের তাপে গা পুড়ে যায় গামছা পানিতে ভিজিয়ে কাজ করছি সূর্যের এতো উত্তাপ জীবনে দেখি নাই। হোশিয়ারি শ্রমিক মো.তপু (২৫)জানায়,টিনের চালের গরমে ঘড়ের ভেতরও প্রচন্ড গরম লাগে দম বন্ধ হয়ে আসে, কখনো তো অসুস্থ বোধ করি।তীব্র তাপে ইট কংক্রিটের খাঁচায় গৃহিণীরাও অসহায় হয়ে পড়েছে।শহরে তামান্না নামের এক গৃহিণী জানায়,দিনভর সূর্য তেতে থাকে ,ঘড় যেন একটা আগুনের ডিব্বা এরমধ্যে লোডশেডিং খুবই অস্বস্তিকর। পাবনা শহরের বাসিন্দা বিল্লাল শেখ (৬৫)জানায় পাবনায় দীর্ঘ সময় ধরে এমন তীব্রতাপের গ্রীষ্মকাল আগে দেখিনি। তীব্র তাপদাহে পাবনা পৌরসভার উদ্যোগে রাস্তায় পানি ছিটানো হয়েছে ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তাপদাহ সম্পর্কে মানুষকে সর্তক ও সচেতন করে মাইকিং করেছে।২৫০শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অতি তীব্র গরমে হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে।গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৩০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে ডায়রিয়া ওর্য়াডে।হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন তাপপ্রবাহে সকলকে সর্তক থাকতে হবে।গরম কম এমন জায়গা বেছে নিতে হবে।গরমে তৃষ্ণার্ত হলে অনেকে বাইরের শরবত খেতে চান।এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এসব ডায়রিয়া ও ডায়রিয়াজনিত অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।