রবিউল রনি: পাবনার ফরিদপুর উপজেলার আরকান্দি গ্রামে দুই পক্ষের সহিংসতার আশঙ্কায় ভিটা বাড়ি ফেলে প্রাণের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে এলাকার মানুষ। বেশিরভাগ বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে গেছে।
গতকাল শুক্রবার ১৪ জুন জুমার নামাজের সময় এলাকার দুগ্ধ ব্যবসায়ী জহরুলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী লুটেরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রায় ২০টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
এরই প্রেক্ষিতে আজ শনিবার সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় নিজেদের গোয়ালের গরু ধান আসবাবপত্র সহ বাড়ির সকল মালামাল নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে গ্রামের বেশিরভাগ লোকজন।
তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলে আমাদের সবকিছু লুট হয়ে যাচ্ছিল তাই আমরা পালিয়ে যাচ্ছি। তারা আরো বলে যে আমার এই সকল মালামাল আমাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে নিরাপদে রাখতে যাচ্ছি। এখানে থাকা নিরাপদ নয় যেকোনো মুহূর্তে জহরুলের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদেরকে খুন বা লুটপাট করতে পারে তাই আমরা পালিয়ে যাচ্ছি।
আরো তথ্যে জানা যায় দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার নিয়ে ঝামেলা চলে আসছিল। এই ঝামেলার জেরে ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ করার জন্যই এই হামলা হয়েছে বলে জানায় এলাকার সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান রিপন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এলাকার প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে এই ঝামেলার উৎপত্তি। খবর পাওয়া মাত্র আমি ওসি সাহেবকে বিষয়টি জানাই। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক থাকলেও পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। আমরা উভয় পক্ষের সাথে একটি সমঝোতা করার চেষ্টা চালাচ্ছি। যাতে করে পরবর্তীতে আর কোন সমস্যা না হয়।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন। নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি আমি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি। একটি বিজয় মিছিল করতে দেই নাই। যাতে করে তৃতীয়পক্ষ কোন সুযোগ নিতে না পারে। তিনি দৃঢ়তার সাথে এই ঘটনাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং নির্বাচনের সাথে কোন সম্পর্ক নাই বলে জানান।
তার কাছে বর্তমানের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন পুলিশ সেখানে সব সময় অবস্থান করছে আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথাবার্তা বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে উত্তেজনা থাকলেও ঠান্ডা ক্ষোভ ব্যাথা থাকলেও আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই।
ঘটনা স্থলে দায়িত্বরত পুলিশ এস আই নাঈম বলেন ঘটনা ঘটার পরপরই আমরা এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ টহলে রয়েছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের নেতা কে আটক করা হয়েছে। এই এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় যে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা আমরা নিব।
এ বিষয়ে ফরিদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা খবর পাওয়া মাত্র সেখানে ফোর্স পাঠিয়েছি পুলিশ তার দায়িত্বে তৎপর আছে। অভিযুক্ত নেতৃস্থানীয় একজনকে আটক করা হয়েছে। আশা করছি আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।