গত ২৩ এপ্রিল (বুধবার) পাবনায় যথাযথ গুরুত্বের সাথে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস।
এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০ টায় পাবনা জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে দিবসটির উপর এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে তার প্রতিনিধি হিসেবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরিফ আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিভিল সার্জন ডা.শহিদুল্লাহ্ দেওয়ান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা) পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট আব্দুল হামিদ খান, সহকারি পুলিশ সুপার আরজুমা আকতার, জেলা শিক্ষা অফিসার রোস্তম আলী হেলালী ও বিআইটি’র পরিচালক আব্দুল হালিম। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর পাবনার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন ও জরুরী তথ্য উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর পাবনার সহকারি পরিচালক মোঃ নাজমুল হক। আলোচনা সভার পূর্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন,শব্দ সচেতনতা রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বাস- ট্রাকের ড্রাইভার এবং রিক্সাচালকরা অনেক সময় অপ্রয়োজনে লাগাতার হর্ণ বাজাতেই থাকে, যাতে তারা অপ্রয়োজনে হর্ণ না বাজায় সে বিষয়ে তাদের মধ্যে মোটিভেশনের মাধ্যমে সচেতনতার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. দেওয়ান শহিদুল্লাহ বলেন, অতিরিক্ত উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে মানুষের কানের সমস্যা দেখা দেয়,মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং প্রেসারও বেড়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা) পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল হামিদ খান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, পৃথিবী এক অদ্ভুত সৌন্দর্যের কারখানা, কতরকম সুন্দর সৃষ্টিতে পরিপূর্ণ এই পৃথিবী। সৃষ্টিকর্তা মানবকূলকে সুন্দর পরিবেশে, স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করার জন্য নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন গাছ-গাছালি, পশু-পাখি। এসবই মানুষের জন্য মহান আল্লাহ্র অশেষ নেয়ামত। কিন্তু পরিবেশ যদি সুন্দর না হয়, পরিবেশ যদি সুরক্ষা না হয়,পরিবেশ যদি দূষণমুক্ত না হয়, তাহলে এতসব নেয়ামত অর্থহীন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন মাইকের উচ্চ আওয়াজ, বাস-ট্রাকের কান ফাটা হর্ন, ইট ভাঙার অসহনীয় শব্দে মানুষ এখন অতিষ্ঠ। এছাড়া ঈদ-পূজা-পার্বন ও বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে উঠতি বয়সের একশ্রেণির যুবকরা পাড়া মহল্লায় রাস্তা দখল করে সাউন্ডবক্স লাগিয়ে উচ্চ শব্দে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে, যা শব্দদূষণতো বটেই সমাজকেও রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে। আর এসব করে কিশোর গ্যাং। যাদের মাথার ওপর আশীর্বাদ থাকে রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট তথাকথিত বড়ভাইরা। এদেরকে কঠোরভাবে দমন করারও আহ্বান জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাপা সেক্রেটারি সাংবাদিক আব্দুল হামিদ খান আরও বলেন, শব্দদূষণ মানুষের তৈরী নিয়ন্ত্রণযোগ্য একটি পরিবেশগত সমস্যা। তিনি উল্লেখ করেন,২০০৬ এর বিধিমালার ধারা ১৭ অনুযায়ী শব্দের মাত্রা অতিক্রম করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হয়ে অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আটক করতে পারবেন। দোষী ব্যক্তিকে প্রথম অপরাধের জন্য ১ মাস জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান আছে। পুনরায় ওই অপরাধ করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৬ মাসের জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছেন। তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ বলেন,আমরা সাধারণ মানুষ ওই আইনের বাস্তব প্রয়োগ চাই। তাতে অপরাধীরা একদিকে যেমন ভয় পাবে, অন্যদিকে তেমনি জনগণের মাঝে সচেতনতাও তৈরী হবে।
পাবনায় আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত
পাবনা সদর
3 Mins Read
এই সম্পর্কিত আরো খবর পড়ুন
Add A Comment