পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নরমাল ডেলিভারির সময় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৮ জুন) ভোর ৪টার দিকে পৌর এলাকার হাসপাতাল সড়কের জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই নবজাতকের বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত মার্চ মাসে এই হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির সময় আরও দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়, একই হাসপাতালে পরপর তিন নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
পাশর্^বর্তী লালপুর উপজেলার মাঝগ্রামের সাইদুর রহমানের স্ত্রী জিমু খাতুনের সন্তান মারা যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অভিযোগকারী সাইদুর রহমান লিখিত অভিযোগে উল্লেক করেন, আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে গত ৬ জুন জমজম হাসপাতালে এনে ডা. নাফিসা কবীরকে দেখানো হয়। তিনি ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে জানান সব স্বাভাবিক আছে। শুক্রবার আমার স্ত্রী জিমুর প্রসব বেদনা শুরু হলে রাত ১টার দিকে জমজম হাসপাতালে ভর্তি করি। ডা. নাফিসা আবারও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন এবং বলেন সব স্বাভাবিক আছে ২ ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক ডেলিভারির সম্ভাবনা আছে, এরপর তিনি বাড়ি চলে যায়। রাত ৩টার দিকে প্রসূতির তীব্র ব্যথা শুরু হলে তাকে ডেলিভারির জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ডা. নাফিসা হাসপাতালে ছিলেন না। নার্স ও আয়াদের দিয়ে ডেলিভারি করানো হয়। কিছুক্ষণ পর আমাকে বলা হয় মৃত সন্তান হয়েছে। পরে ডা. নাফিসা কবীর হাসপাতালে এসে একই কথা বলেন।তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রসূতির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। এ ব্যাপারে হাসপাতালটির মালিক ডা. নাফিসা কবীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে, বিষয়টি নিয়ে আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে বক্তব্য দিয়েছি, আপনারা ঘটনাটিকে পেচানোর চেষ্টা করছেন।
সাইদুর রহমান বাদী হযে ওই হাসপাতালের মালিক ডা. নাফিসা কবির, নার্স বা আয়া পারুল খাতুন, সাথী ও রাসেলের নাম উল্লেখ করে ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদরাক সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো.মালেকুল আফতাব বলেন, এ খবর পাওয়ার পর পরই সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। সেখান থেকে এসে হাসপাতালের তিনজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।