এম এ আলিম রিপনঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬৯ পাবনা-২ আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেলেন বতর্মান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আহমেদ ফিরোজ কবির। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও পাবনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আহমেদ তফিজ উদ্দিনের সন্তান। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় থেকে বি.কম অনার্স এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে এম. কম সম্পন্ন করা আহমেদ ফিরোজ কবির এর আগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজশাহী কলেজ শাখার সদস্য (১৯৭৮-১৯৮০ইং), সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য(১৯৯৮-২০১৩ইং), উপজেলা পরিষদের চেয়রম্যান(১৯৯৮-২০১৪ইং), পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (২০১৬-২০২১ইং) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে আহমেদ ফিরোজ কবির উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগকে আবারও বিজয়ী করতে উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দেবার আহ্বান জানান সকলকে । তিনি জানান,পাবনা-২ নির্বাচনী এলাকার গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে থেকে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। পুনরায় বিজয়ী হলে তিনি তার সকল যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে নির্বাচনী এলাকার অবহেলিত জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অতীত এবং বর্তমানের ন্যায় কাজ করে যাবেন । সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, পাবনা-২ আসনের সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক আহমেদ ফিরোজ কবির। নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন,সমাজ সেবা, ও ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে চলেছেন। ফলে নির্বাচনী এলাকা জুড়ে আ.লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে তার একটা পরিচ্ছন্ন ও নিজস্ব ব্যক্তি ইমেজ রয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা যোগ্য ব্যক্তিকেই নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন । উল্লেখ্য,সুজানগর পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৬৯ পাবনা-২ সংসদীয় আসন । দেশ স্বাধীনের পর থেকে এ পর্যন্ত আসনটি থেকে ৬ বার আওয়ামী লীগ, ৪ বার বিএনপির এবং একবার জাতীয় পার্টি দলীয় প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আহমেদ তফিজ উদ্দিন মাস্টার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মির্জা আব্দুর রশিদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মির্জা আব্দুর রশিদ সংসদ সদস্য থাকাকালে ১৯৮২ সালে আবার রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জাতীয় পার্টি প্রার্থী মকবুল হোসেন সন্টু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় পার্টি দীর্ঘ ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি দলীয় হ্যাবিওয়েট প্রার্থী ওসমান গনি খান (ওজি খান) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে দুই দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দফা ১৫ ফেব্রুয়ারী এবং দ্বিতীয় দফা ১২ জুন। প্রথম দফা অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী একেএম সেলিম রেজা হাবিব এবং দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আহমেদ তফিজ উদ্দিন মাস্টার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তফিজ উদ্দিন মাস্টার নির্বাচিত হওয়ার দুই বছর পর মারা গেলে ১৯৯৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) একে খন্দকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী একেএম সেলিম রেজা হাবিব সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) একে খন্দকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার আজিজুল হক আরজু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আহমেদ ফিরোজ কবির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবং এবারে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬৯ পাবনা-২ আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেলেন বতর্মান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আহমেদ ফিরোজ কবির । এদিকে মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই রবিবার বিকেলে সুজানগরে আনন্দ মিছিল বের করে দলীয় নেতাকর্মীরা।