ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও দিলপাশার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগর সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল হান্নান ৪দিন পর তার নিজ পরিষদে দায়িত্ব পালনের জন্য গেলে তাৎক্ষণিক ইউপি‘র শত শত ছাত্র জনতার বিক্ষোভের কারণে কার্যালয় চত্ত্বর থেকে ফিরে গেলেন।
গতকাল রোববার সকাল ১১টায় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ও সচিব শামীম আহমেদ সহ বেশ কয়েকজন গ্রাম পুলিশ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালনের জন্য গেলে ছাত্র জনতা বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষিপ্ত ছাত্র জনতা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে যেতে না দিয়ে ভোট চোর, দূর্নীতিবাজ, অবৈধভাবে চেয়ার দখলকারী স্লোগান দিয়ে চেয়ারম্যানের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণ দাবি করে। অবস্থা বেগতিক দেখে ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব ও গ্রাম পুলিশদের নিয়ে পরিষদ ত্যাগ করেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ দাবী করেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ কারী ও ইউপি সদস্যদের দাবি ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে রাতের আধারে ভোট চুরি করে অবৈধভাবে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ দখল করেন আব্দুল হান্নান। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে দিলপাশার ইউনিয়নে দখলদারিত্বসহ সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করেছেন। দুর্নীতি করে হয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক। এ চেয়ারম্যানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ দিলপাশার ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। অপকর্মের হোতা চেয়ারম্যানকে এ পরিষদ কার্যালয়ে আর বসতে দেওয়া হবে না। পদত্যাগ না করা পর্যন্ত পরিষদের সকল কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না বলে বিক্ষোভকারী ছাত্র জনতা হুশিয়ারী দেন।
ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শী দিলপাশার ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মোঃ আব্দুল হাই, সদস্য সচিব আরজু খান, ইউপি যুবদল নেতা নান্নু মিয়া ও মোন্নাফ আলী বিক্ষিত ছাত্র জনতার দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের অত্যাচারে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তাকে ইউনিয়নবাসী আর দেখতে চায় না। তাকে দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে।
দিলপাশার ইউপির অধিকাংশই সদস্যরা জানান, চেয়ারম্যান ক্ষমতার দাপটে পরিষদের সদস্যদের নিয়ে কার্যালে মিটিং ডাকেননি। নিচ বাড়ীতেই অলিখিত অস্থায়ী কার্যালয় বানিয়ে পরিষদের সকল কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। কোন প্রকল্প থেকে সরকারী ভাবে কত টাকা বরাদ্দ এসেছে তা জানতে দেননি পরিষদের সদস্যদের। তিনি একাই ভূয়া বিল ভাউচার করে বরাদ্ধকৃত টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বরখাস্ত ও বিচারের দাবি করছেন তারা।
দিশপাশার ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ শামীম আহমেদ ঘটনার সতত্য স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান, গ্রাম পুলিশ সহ আমরা কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতে গেলে জনগণের তোপের মুখে পরিষদ কার্যালয় থেকে ফিরে আসছি।
এ ব্যাপারে দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান এর মুঠো ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করলেও ফোন রিসিভ না করায় তার মোতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ নাজমুন নাহার বলেন, পরিষদ কার্যালয়ে তালা দেওয়া ও চেয়ারম্যানকে কার্যালয়ে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনা শুনেছি। এই উদ্ভব পরিস্থিতি নিরেশন কল্পে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে।