সাঁথিয়া প্রতিনিধিঃ
পাবনার সাঁথিয়ায় পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনের ঘরের চাল থেকে ফুটবল আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল তানজিল(৭)নামের এক শিশু শিক্ষার্থীর। নিহত তানজিল করমজা ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের মিন্টু প্রামানিকের ছেলে এবং পুন্ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। রোববার (৯জুন)সন্ধ্যায় ওই মাদ্রাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগেও গত শুক্রবার(৭জুন) বিল্লাল(৯)নামের এক শিশু ওই মাদরাসার টিনের চাল থেকেই ফুটবল আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত বিল্লাল বাওইটোলা গ্রামে তার নানা বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। সে সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামের রহম ফকিরের ছেলে।
ঘটনার পর স্থানীয় উত্তেজিত জনতা লাশ নিয়ে মাদরাসা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং মাদরাসা সুপারের বাড়ি ঘেরাও করে বলে জানা গেছে। একদিনের ব্যবধানে দুটি দুর্ঘটনায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মত ঘটনার দিন বিকেলে পুন্ডুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তানজিল বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলছিল। খেলার একপর্যায়ে ফুটবলটি পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনের চালের উপরে আটকে গেলে তানজিল গ্রিল বেয়ে চালের উপর থেকে সেটি আনতে যায়। এসময় টিনের চালে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে তানজিল আটকে যায় এবং কিছুক্ষণ পর মাটিতে ছিটকে পরে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবারে পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ওই টিনের চালেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। এর পরেও মাদ্রাসা কর্তপক্ষ কেন বিদ্যুৎ মেরামতের কাজ করেননি? নাকি ছেলেরা চাল থেকে বল আনায় টিনের ক্ষতি হয় বলেই কি চাল বিদ্যুতায়িত করে রেখেছিল কর্তৃপক্ষ? এটা আমাদের প্রশ্ন। আমরা এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।
পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াদুদ জানান, শুক্রবারে একটি ছেলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হওয়ার পর আমরা টেষ্টার দিয়ে চেক করে দেখছিলাম কিন্ত কোথাও কোন সমস্যা পাই নাই। আজ কিভাবে যে কি হলো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা। আর এমনিতেই তো ছেলেরা চালে উঠে লাফালাফি করে এতে দুর্ঘটনা হতেই পারে।
আহত বিল্লালের বাবা রহম ফকির জানান, আমার ছেলে পুন্ডুরিয়া মাদ্রাসার চালে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে চাল থেকে পরে গিয়ে মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে গিয়েছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছে। আমার ছেলেকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও)মাহমুদুল করিম রাজু জানান, ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমাদের কর্তব্যরত চিকিৎসক বুঝতে পারে ছেলেটির ঘটনাস্থলেই মারা গেছে।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়া শিশুটির লাশ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।আপাতত থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কারো অবহেলা থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।