আটককৃতরা হলেন, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আলোকদিয়ার গ্রামের শরিফুল ইসলামের স্ত্রী তসলিমা খাতুন (৩৫), পাবনা পৌর সদরের আরিফপুর মহল্লার আব্দুর রহমান মোল্লার ছেলে মোবারক মোল্লা (২৫), দিলালপুর মহল্লার জহুরুল ইসলাম (৩৫) ও তানভীর ইসলাম (৩০)।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, দুপুরে বেশকিছু সন্ত্রাসী একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সাংবাদিক উৎপল মির্জার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা সাংবাদিকের নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বাসার তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। ঘটনার সময় সাংবাদিক উৎপল মির্জা বাড়িতে ছিলেন না। হামলার ঘটনায় ভীত সন্ত্রস্ত সাংবাদিক উৎপল মির্জার স্ত্রী ফোনে তাকে ঘটনা জানান। তিনি তাৎক্ষনিক পুলিশ সুপারকে জানালে সদর থানার ওসির নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠান।
সদর থানার ওসি রওশন আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে এক নারীসহ চারজন আটক করে। অন্যরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে পুলিশ। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, ‘হামলার ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক হাতেনাতে চারজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে। তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর পেছনে কারা ছিল, কি কারণে এই হামলার ঘটনা সব খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
ভুক্তভোগী সাংবাদিক উৎপল মির্জা বলেন, ‘দুপুরে আমি মাছারাঙা টেলিভিশনের পাবনা অফিসে কর্মরত ছিলাম। এ সময় আমার স্ত্রী কান্নাজড়িত কন্ঠে হামলার ঘটনাটি জানায়। আমি দ্রæত পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি সদর থানার ওসিকে ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে পাঠান। পরে হামলাকারী বেশিরভাগ পালিয়ে গেলেও চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।’
উৎপল মির্জা বলেন, ‘হামলাকারীরা বহিরাগত, তাদের আগে কখনও এলাকায় দেখা যায়নি। তাদের ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছে বলে মনে হয়। কেন, কি কারণে এই হামলা তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি তিনি। তবে ইছামতি নদী নিয়ে একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট করার কারণে সংক্ষুব্ধ কেউ হামলার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন সাংবাদিক উৎপল মির্জা।’
এদিকে সাংবাদিক উৎপল মির্জার বাড়িতে সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাবনায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিক উৎপল মির্জার বাড়িতে প্রকাশ্যে সশস্ত্র হামলার ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা এই হামলার পেছনে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। পাশাপাশি পরিবারটির নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি।’
পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ‘সাংবাদিক উৎপল মির্জা বাদি হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে রবিবার সন্ধ্যায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় আটককৃতদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।’