নির্মল সরকার ঃ
মিষ্টি কুমড়া চাষ করে পাবনার বেড়া উপজেলার কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫ শতাধিক চাষি অন্যান্য ফসলের সাথে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতা। অল্প সময়, স্বল্প খরচ আর ভালো ফলনে ওই অঞ্চলের কৃষকরা স্বনির্ভর হচ্ছে,আসছে সংসারে স্বচ্ছলতা। পরিবার পরিজন নিয়ে সত্যিই অনেক খুশি।
কৃষকদের জীবন-জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে কৃষির এই সফল পরিবর্তন। উর্বর বেলে-দোআঁশ মাটির কারণে বেড়া পৌর এলাকা সহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে মিষ্টি কুমড়া আবাদের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিক লাভ এবং দীর্ঘদিন অপচনশীল থাকার জন্য কৃষি বিভাগও দিচ্ছে প্রযুক্তি সহায়তা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ ও প্রশিক্ষণ দেয়া গেলে কুমড়া চাষ বদলে দিতে পারে বেড়া উপজেলার কৃষি অর্থনীতি। বেড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। বেড়া পৌর এলাকার সম্ভুপুর গ্রামের কৃষক হানিফ সরদার জানান, কার্তিক মাসের মাঝামাঝির দিকে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয় ৯০ দিনের মধ্যে মিষ্টি কুমড়া বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। তিনি এ বছর ২ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করেছেন। চর নাকালিয়া গ্রামের কৃষক আমির আলি জানান, আমি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি, ফলন অনেক ভালো হওয়ায় ওই কৃষক প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভবান হবে বলে আশা করছেন। ছোট পায়না গ্রামের আলতাফ সরকার বলেন ১ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে খরচ হয় ৮-৯ হাজার টাকা, ফলন ভালো হলে বিঘা প্রতি দেড় থেকে দুই টন মিষ্টি কুমড়া চাষ হবে। ১২ শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করলে বিঘা প্রতি প্রায় ২৫ -৩০ হাজার টাকা কৃষকরা লাভবান হবে। অন্যান্য ফসলের সাথে কুমড়া আবাদ করায় এতে কৃষকদের আলাদা কোনো খরচ করতে হয় না।সরেজমিনে দেখা গেছে, বেড়া পৌর এলাকা ছাড়াও উপজেলার ঢালার চর,আমিনপুর, রুপপুর, সিংহাসন, হাটুরিয়া, নাকালিয়া, হরিরামপুর, মাসুমদিয়া এলাকার জমিতে কমবেশি মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছে। এ অঞ্চলের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া সিএ্যান্ডবি কাঁচামালের সবজি আড়ত সহ রাজধানীর কাওরান বাজারে পাইকারী দরে বিক্রি করছেন বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। কৃষক আকবর আলী জানান, ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকেই নগদ টাকায় কিনে নিচ্ছেন মিষ্টি কুমড়া। প্রতিটি কুমড়া আকার ভেদে ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ক্ষেত থেকেই পাইকারী ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়। তাই আমাদের বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়না। পাইকারী ব্যবসায়ী পলাশ জানান, অন্যান্য এলাকার চেয়ে এখানকার উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া সুস্বাদু বেশি হওয়ায় চাহিদাও একটু বেশি। এবছর তিনি আড়াই লক্ষ টাকার মিষ্টি কুমড়া পাইকারী ক্রয় করেছেন। ৫০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।
উপজেলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত কবির এ প্রতিবেদককে জানান, কৃষকরা ফুলকপি, আলু, চাষের সঙ্গে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছে। কম খরচে ভালো লাভ পাচ্ছেন।এবং মাঠ পর্যায়ে প্রতিনিয়ত কৃষি অফিস থেকে মিষ্টি কুমড়া চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যাতে করে দিন দিন এখানকার কৃষকরা মিষ্টি কুমড়া আবাদে মনযোগী হয়ে উঠে।
বেড়ায় মিষ্টি কুমড়া চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষক
বেড়া
3 Mins Read
Previous Articleভাঙ্গুড়ায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা
এই সম্পর্কিত আরো খবর পড়ুন
Add A Comment