পৃথিবীব্যাপী পরিবেশ সুরক্ষা আজ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় মানুষকে পরিবেশ সচেতন করে তুলতে না পারলে, পরিবেশের ভয়াবহতা বিষয়ে সজাগ করতে না পারলে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। পরিবেশ সুরক্ষায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দায়বদ্ধতা তৈরী না হলে, যার যার অবস্থান থেকে সবাই ভূমিকা না রাখলে এ পৃথিবী একসময় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
গত ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পাবনায় এক আলোচনা সভায় বক্তাগণ এসব কথা বলেন।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর, পাবনার যৌথ আয়োজনে সকাল সাড়ে ১০টায় এক বিশাল শোভাযাত্রা পাবনা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপরে একটি বৃক্ষরোপণ পরবর্তী আলোচনা সভাঅনুষ্ঠিত হয়।
পাবনা জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান এর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ শরীফ আহমেদ, সহকারি পুলিশ সুপার আরজুমা আক্তার, পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ও বন-পরিবেশ কমিটির সদস্য শ্রী চন্দন কুমার ঠাকুর,বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট আব্দুল হামিদ খান ও পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর এনভায়রনমেন্টাল টেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ রোকনুজ্জামান।
বক্তাগণ বলেন, এবারে বাংলাদেশে তাপমাত্রা সকল রেকর্ড অতিক্রম করে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। যেসব কারনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা নিদেনপক্ষে কমিয়ে আনতে না পারলে এই ভয়াবহ তাপমাত্রার ঝুঁকির মধ্যে পড়বো আমরা সবাই। তাপমাত্রার এই ভয়াবহতায় বর্তমানের অনেক সবুজ শ্যামল অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে, বৃদ্ধি পাবে ঝড়-তুফান,সামুদ্রিক জলোচ্ছাস। তারা উল্লেখ করেন বর্তমান পৃথিবীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীর জনসংখ্যার ৪ শতাংশ মানুষ বাস করে আমেরিকায় অথচ এরা সারা পৃথিবীতে সৃষ্ট কার্বনের ২৬ শতাংশ উৎপন্ন করে। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়া এখন চরমভাবাপন্ন হচ্ছে। বক্তারা বলেন, সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরনকারী দেশগুলোই এখন গোটা বিশ্বের নীতি নির্ধারক। তাদের কারনে আমাদের মত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পরিবেশ আজ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
বক্তারা বলেন শিল্পোন্নত দেশগুলো আমাদের বিপদের দিকে তাকাবে না। এমতাবস্থায় আমরা যে কাজটা করতে পারি তাহলো পর্যাপ্ত বৃক্ষরোপণ করে আমাদের দেশটাকে সবুজায়নে ভরে ফেলতে পারি।
তারা বলেন, গাছ আমাদের পরম বন্ধু ও প্রতিবেশী। আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে ও পরিচর্যার মাধ্যমে সেগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কারণ গাছ শুধু ক্ষতিকর কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহন ও অক্সিজেন দিয়েই তার উপকারিতার সমাপ্তি করে না।গাছ থেকে আমরা ফুল পাই, ফল পাই,সুশীতল বাতাস পাই, সর্বোপরি মরণব্যাধীর ঔষধও যোগান দেয় এই গাছ।
বিভিন্ন বক্তা দীর্ঘ বক্তৃতায় বলেন, আমাদের জলাশয়,নদী, খাল-বিল হারিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ সুরক্ষা করতে হলে এগুলোর সংরক্ষণ করতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত সার, কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটি-পানি-বায়ু দূষিত হয়ে যাচ্ছে। যা পরিবেশের ভারসাম্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য করে রাখতে সব স্তরের মানুষকে পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।
পৃথিবীব্যাপী পরিবেশ সুরক্ষা আজ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে-পাবনায় পরিবেশ দিবসে বক্তারা
পাবনা সদর
2 Mins Read
এই সম্পর্কিত আরো খবর পড়ুন
Add A Comment