জলবায়ু সংকটে অপরিহার্য জনশক্তি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পাবনা আইডিয়াল নার্সিং কলেজের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ বা ধাত্রী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। রোববার (৫ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল রোডস্থ আইডিয়াল নার্সিং কলেজ থেকে এক র্যালী বের করা হয়। পরে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল চত্ত্বরে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পুনরায় র্যালী নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে আসা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পাবনা আইডিয়াল নার্সিং কলেজের পরিচালক আবু দাউদ, পাবনা আইডিয়াল নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপাল ড.উমা রায়, উপাধ্যক্ষ হোসনেয়ারা পারভীন, পাবনা জেনারেল হাসপাতালের নার্সিং সুপার ভাইজার আক্তার ভানু, মোছা তসলিমা, সুফিয়া খাতুন, নাসিমা খাতুন প্রমুখ।
পাবনা আইডিয়াল নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপাল ড.উমা রায় বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ মে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনটি মা এবং তাদের নবজাতকদের প্রয়োজনীয় যত্নের জন্য মিডওয়াইফদের কাজকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে উদযাপিত হয়।
মিডওয়াইফদের স্বীকৃতি ও সম্মান জানাতে একটি দিন থাকার ধারণাটি ১৯৮৭ সালে নেদারল্যান্ডসে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইভস কনফেডারেশন সম্মেলন থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক মিডওয়াইভস ‘দিবসটি প্রথমবারের মতো ৫ মে. ১৯৯১ সালে পালিত হয়েছিল এবং বিশ্বের প্রায় ৫০ টিরও বেশি দেশে এটি পালিত হয়েছে। একজন মিডওয়াইফ বা ধাত্রী গর্ভাবস্থায়, প্রসব বেদনা এবং প্রসবের প্রারম্ভিক অবস্থায় নারী এবং শিশুদের পরামর্শ, যত্ন এবং সহায়তা দিয়ে থাকেন। তিনি গর্ভাবস্থার সময়ে নারীদের তাদের তত্ত্বাবধানে রেখে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন এবং স্বাস্থ্য ও শিশুর পরিচর্যা বিষয়ক উপদেশ দেন।
এছাড়াও একজন মিডওয়াইফ মা এবং সন্তান উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ এবং গর্ভাবস্থা বা জন্মকালীন মেডিকেল জটিলতা দেখা দিলে গাইনি চিকিৎসক দেখানোর জন্য পরামর্শ দেন। একজন মিডওয়াইফ হাসপাতাল এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা দিয়ে থাকেন।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের তথ্যমতে, ২০১০ সালে জাতিসংঘের ৬৫তম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মিডওয়াইফারি সেবা এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতি দেন। তার সেই প্রতিশ্রুতির আলোকে সারাদেশের গর্ভবতী মা ও নবজাতকের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে ৪২১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এক হাজার ৩১২টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারে তিন হাজার মিডওয়াইফ পদ সৃষ্টি করা হয়। ইউনিয়ন সাব সেন্টারে এক হাজার ১৪৯ জন রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১৩ সালে দেশে প্রথম ২০টি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫২৫ আসনে তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স চালু করা হয়। বর্তমানে সেখানে সরকারি ৪১টি সরকারি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৫০টি আসন বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বেসরকারি আরও ৪১টি প্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৮০টি আসনে ভর্তি কার্যক্রম চলছে। সারাদেশে চার হাজার ৪৩৯৬জন রেজিস্ট্রার মিডওয়াইফ বয়েছেন।