ঈশ্বরদী সংবাদদাতাঃ
গরুর বিকল্প হিসেবে মহিষ পালন ও পরিচর্যা এখন লাভজনক। একসময়ে মালবোঝাই গাড়ি টানতে কৃষকরা গরুর চেয়ে মহিষের ওপরই বেশি নির্ভর করতেন। মহিষ শুধু গাড়িই টানে তা নয়; এ থেকে উপাদেয় দুধ এবং মাংস পাওয়া যায়। এর গোবর জৈব সারের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। এর হাড় থেকে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী যেমনÑ বোতাম, চিরুনি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। তেমনি এ থেকে পশুখাদ্য ও সার পাওয়া যায়। গরুর তুলনায় মহিষের বার্ষিক বৃদ্ধির হার বেশি। কারণ মহিষের রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা অনেক বেশি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় এরা অনায়াসে বাঁচতে পারে।
বিজ্ঞান ভিত্তিক মহিষ পালন ও খামার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তিনদিন ব্যাপী খামারি প্রশিক্ষণে শনিবার (২০ জনুয়ারী) সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গির হোসেনের আলোচনায় এ বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার সভাপতি ও মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি ড. গৌতম কুমার দেব বলেন, গরুর বিকল্প হিসেবে মহিষ পালনের সুবিধা বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য উৎপাদনের জন্য মহিষের দুধ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি উপযোগী। গরুর চেয়ে মহিষ আকারে বড় হওয়ার কারণে মহিষ থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি মাংস পাওয়া যায়। শস্য উৎপাদনে কর্দমাক্ত জমি চাষের জন্য গরুর চেয়ে মহিষ বেশি উপযোগী। এ ছাড়াও এক জোড়া মহিষ এক জোড়া গরুর তুলনায় অনেক বেশি জমি চাষ করতে পারে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি নার্সারীর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে ৫০ জন করে দুইধাপে ১০০ জন খামারি অংশগ্রহন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিপ্লব কুমার রায়। সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের কোর্স সমন্বয়কারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন। বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. নাজমুল হোসাইন।
জানা গেছে, ঈশ্বরদীর মোট ১৮৭টি খামারে ১ হাজার ৪৭৫টি মহিষ পালন করা হচ্ছে। রাজশাহী বিভাগের গোদাগারি এবং ঈশ্বরদীতে সবচেয়ে বেশী মহিষের খামার থাকায় প্রকল্পের মাধ্যমে বিভাগের এই দুই এলাকার খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।