খালেদ আহমেদঃ আমি এখানে যোগদান করেছি প্রায় ১৬ মাস আগে। আমার চাকরির সূত্রে যেটা মনে হয়েছে, যেটা ডিসি স্যারের চেম্বারে সব সময় শুনি, ইছামতি নদী, ইছামতি নদী পুনরুদ্ধার কমিটি, এটাকে জাগ্রত করতে হবে। শুনতে শুনতে আমরা যখন অফিস থেকে বাসায় যাই এবং বাসা থেকে অফিসে আসি তখন একটা নদী দেখতে পাই। ওখানে আবার লেখা আছে নদীর নাম ইছামতি! তখন আমার কাছে মনে হল ছেলেবেলায় আমরা গরুর ছবি এঁকে লিখে দিতাম “চিত্র ১ গরু” ছাগলের ছবি এঁকে লিখে দিতাম “চিত্র ২ ছাগল”। অর্থাৎ গরুর ছবি এঁকে যদি আবার গরু লিখতে হয় তাহলে এটা কি দাঁড়লো। নদীর নাম “ইছামতি” সাইনবোর্ডে লিখে সবাইকে জানাতে হচ্ছে এটার নাম ইছামতি। তখন আমার মনে হয় এই পুনরুদ্ধার কমিটি সঠিক হয়েছে। তারা এমন একটি আন্দোলন করছেন, আমার বিশ্বাস একসময় নদীটির পরিচয়ের জন্য ওই সাইনবোর্ড লাগবেনা, ওটা উঠে যাবে। একসময় ওখানে প্রবাহমান পানি থাকবে। আপনাদের যে আন্দোলন এটা ফলপ্রসু এবং সাকসেসফুল আন্দোলন। আপনাদের আন্দোলনের ফলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে এটা পাস করিয়েছেন। এজন্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী’র কাছে আমরা পাবনাবাসী সবাই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। খনন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট ও আমরা জেলা প্রশাসন জরিপ করে দেওয়া, মাপ করে দেওয়া, সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া এই টাইপের অন্যান্য সার্বিক সহযোগিতা করছি। আপনাদের কোন অবজারভেশন থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন। তারা আমলে নিলে হয়তো আবার অন্য কিছু হবে। তবে আমি যেটা বলব, আপনাদের এতদিনের আন্দোলনের ফসল একটা নদী কিন্তু পেতে যাচ্ছেন। যে নদীটা মৃতই বলা যায়। সেই নদীটা আবার জীবিত হচ্ছে। এর কৃতিত্ব কিন্তু আপনারা যারা আন্দোলন করছেন তাদের সবার। ইছামতি নদী, সংযোগ খাল, সুতি খালি নদী, ভাঁড়ারা খাল এই ৪টি মিলিয়েই কিন্তু কিলোমিটার নির্ধারণ করে দেয়া আছে। অনেকসময় অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এখানে আমার মনে হয় অনিয়ম হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, কারণ সবার সামনেই কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আমরা জানি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন সময় বড় বড় প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছে।
গতকাল বুধবার ৫ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দৈনিক সিনসা কার্যালয়ে এবছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে রিভারাইন পিপল কর্তৃক আয়োজিত ইছামতি নদীর পরিবেশ সুরক্ষায় করণীয় শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব জাহাঙ্গীর আলম এ কথাগুলো বলেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন রিভারাইন পিপল এর সভাপতি ও অনুষ্ঠানের সভাপতি ডক্টর মনছুর আলম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ডাঃ প্রফেসর ইফতেখার মাহমূদ, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান হাবিব, কৃষিবিদ জাফর সাদেক ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দেওয়ান মাজহারুল ইসলাম মুন্নু।
ইছামতি নদী পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়ে ১ মিনিটের বক্তব্য দেন সূচনা সমাজকল্যাণের নির্বাহী পরিচালক পূর্ণিমা ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক জিয়া রহমান, পাবনা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি হাসান আলী, খোলা কাগজের জেলা প্রতিনিধি হুমায়ুন কবীর, দৈনিক আনন্দবাজারের জেলা প্রতিনিধি শিশির ইসলাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট পাবনা জেলার অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মীর ফজলুল করিম বাচ্চু, বিশিষ্ট সমাজ কর্মী ভাস্কর চৌধুরী, কবি সালেহা ইমতিয়াজ, কবি মধুসূদন মজুমদার, কবি ও গল্পকার ফিরোজা পারভীন, কবি নাসিমা খন্দকার, জীবন পথের প্রদীপ পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা এমএন রাজু মিয়া ও কবি মানিক মজুমদার।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএ কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কবি ও বাচিক শিল্পী মঞ্জুরুল ইসলাম, সমাজকর্মী সাইদ ইসলাম, বিং হিউম্যান বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি শোয়াইব আহমেদ, সদস্য দেবজ্যোতি চক্রবর্তী, দৈনিক বিপ্লবী সময়ের ক্যামেরা পার্সন দাউদ শেখ, সিনসা অফিস স্টাফ ফজলে রাব্বি ও অমিত হাসান।
অনুষ্ঠান শুরু হয় পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত দিয়ে। তিলাওয়াত করেন রিভারাইন পিপল’র প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালেদ আহমেদ আল চিশতি নিজামী ফকির।