ঈশ্বরদী সংবাদদাতাঃ :
অনুমতি ছাড়াই রূপপুর পারমাণবিকে কর্মরত রাশিয়ানসহ বিদেশীরা অবৈধ অনুমোদনহীন ট্যাক্সিতে যেখানে-সেখানে চলে যাচ্ছে। এসব বিদেশীদের বাজারে যাতায়াতের জন্য কোম্পানীর গাড়ি রয়েছে। ঈশ্বরদীর বাইরে যাতায়াতের জন্য কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি নেয়ার নিয়ম থাকলেও অনেকেই মানছেন না নিয়ম। আইন-শৃংখলা বাহিনীর নাকের ডগার ওপর দিয়ে অবৈধ অনুমোদনহীন ট্যাক্সিতে রাশিয়ান এসব নাগরিক চলাফেরা করছে। এভাবে চলাফেরা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সংশ্লিষ্ঠরা দেখেও দেখছেন না।
আরএনপিপি’র আবাসন গ্রীণসিটির সামনে সড়কের পাশেই সারি করে দাঁড় করিয়ে রাখা বিভিন্ন মডেলের প্রাইভেট কার। ব্যবহৃত হচ্ছে ট্যাক্সি নামে। নির্দিষ্ট কোন স্ট্যান্ড না থাকায় সড়কের পাশেই পার্কিং করে বানানো হয়েছে অবৈধ স্ট্যান্ড। গ্রীণসিটিতে বসবাসরত রূশ নাগরিকরা বের হলেই “বন্ধু ট্যাক্সি” বলে ইশারা-ইঙ্গিতে পরিবহনের জন্য ডেকে নিচ্ছে অবৈধ ট্যাক্সি চালকরা। রূশ নাগরিকরা গাড়িতে ওঠা মাত্র তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলছে অনুমোদনহীন ট্যাক্সি। নিষেধ থাকা সত্বেও পাবনা, রাজশাহী ও ঢাকার মত বিভিন্ন দুরের রুটে রূশ নাগরিকরা অনুমতি না নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় অবৈধ ট্যাক্সিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রূশ নাগরিকদের যত্রতত্র চলাচলে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কারণ বিদেশীদের নিরাপত্তার বিষয় ছাড়াও রয়েছে সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
এদিকে গ্রীণসিটির সামনে পুলিশের গাড়ি এসে থামলেই কোন কোন চালক তাদের গাড়ি নিয়ে পালিয়ে সটকে পড়ে। আবার অনেকেই দিব্যি দাঁড়িয়ে থেকে পুলিশের সামনেই রূশ যাত্রী তুলছেন। কয়েকজন চালক এসে পুলিশের কানে কানে কথা বলা মাত্রই পুলিশ চলে যায়। পুলিশ চলে গেলেই পুনরায় শুরু হয় যাত্রী পরিবহনের কাজ। এভাবেই রূশ নাগরিকদের পরিবহন কাজে এসব অবৈধ যানবহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঈশ্বরদী উপজেলার নতুন হাট গ্রীণসিটি এলাকায়।
দেশের মেগাপ্রকল্প রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরতদের আবাসনের জন্য নতুনহাট এলাকায় গড়ে উঠেছে গ্রীনসিটি। রূশ নাগরিকদের বাহিরের যানবহনে চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও গ্রীনসিটির সামনে প্রায় ৫০ টিরও বেশি অবৈধ ট্যাক্সি তাদের নিয়ে চলাচল করছে সড়ক-মহাসড়কে। এসব গাড়ির নেই বৈধ কাগজপত্র, নেই দক্ষ চালক এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স। অনেকেই জানেন না ফিটনেস কি? ট্যাক্সি নামে চল্লেও নেই অনুমোদন। রূশ নাগরিকদের পরিবহন কাজে এসব অবৈধ যানবহন বন্ধে নির্দেশনা থাকলেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং অভিযোগ রয়েছে, মাসিক চুক্তিতে অবাধেই চলছে এসব যানবহন। দেখভালের জন্য নিয়োজিত আইন-শৃংখলা সংস্থার লোকজন এসব গাড়ি থেকে নিয়মিত চাঁদা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চালকরা অকপটেই স্বীকার করে বলেন, এখানে গাড়ি পার্কিং করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এরপরও আমরা ম্যানেজ করে রাশিয়ানদের পরিবহনের জন্য গাড়ি পার্কিং করি। মাঝে মাঝে পুলিশ এসে একটু ঝামেলা করে। গাড়ির চাবি খুলে নিয়ে যায়। ম্যানেজ করলে আবার গাড়ি চলতে দেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ম্যানেজ করে রূশ নাগরিক পরিবহনে অবৈধ যান চলাচলের বিষয়টি সঠিক নয়। রূশ নাগরিক পরিবহনে গ্রীণসিটির সামনে যে গাড়িগুলো চলছে সেগুলো যদি অবৈধ হয়ে থাকে তাহলে আমরা শিগগিরই চলাচল বন্ধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম বলেন, রূশ নাগরিকদের যানবাহনে চলাচলে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যদি নিয়মবহির্ভূত অবৈধ যান চলাচল করে এবং এসব যান চলাচলে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তদন্ত পূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রীনসিটি সংশ্লিষ্ট আরএনপিপি’র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাশিয়ানদের এককভাবে চলাচলে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। যদি তারা এককভাবে চলাচল করে তবে পুলিশকে অবহিত করার নিয়ম রয়েছে। এসব দেখাশোনার দায়িত্ব প্রশাসনের লোকজনদের। গ্রীণসিটির সামনে যে গাড়িগুলো চলছে তা সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। রূশ নাগরিকদের পরিবহনে এসব গাড়ি চলাচলের অনুমতি নেই। উপজেলার আইন-শৃঙ্খলার মিটিংয়ে আমরা এসব গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে প্রশাসনের লোকজনকে অবগত করেছি।
অনুমতি ছাড়া অনুমোদনহীন ট্যাক্সিতে রূশ নাগরিকদের যত্রতত্র চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ
ঈশ্বরদী
3 Mins Read
Next Article চাটমোহরের গুমানী নদীতে মাটি কাটার মহোৎসব
এই সম্পর্কিত আরো খবর পড়ুন
Add A Comment