ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাতে ভাটপাড়া এলাকার বাড়িতে প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বাইরে যায় ঐ কিশোরী। এসময় শিক্ষার্থীকে মুখ চেপে পাশের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায় বারেক, সাজিদ ও ইমন নামের তিন বখাটে। পরে সাব্বির ও তুহিন নামে আরো দুজন যোগ দিয়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ নির্যাতন ও ধর্ষণ করে। কিশোরীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে পালিয়ে যায় বখাটেরা।এ ঘটনায় ওই কিশোরীর নানী বাদী হয়ে অভিযুক্ত আব্দুল বারেক মন্ডল নামে এক যুবককে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নামে সুজানগর থানায় মামলা করেছেন। বখাটে যুবক আব্দুল বারেক মন্ডল স্থানীয় ভাটপাড়া গ্রামের মো: উমেদ আলীর ছেলে। এ সময় তারা কিশোরীর স্বর্ণালঙ্কারও ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর।
ভুক্তভোগী কিশোরীর নানী ও মামলার বাদী বলেন, গত ৮ মে নির্বাচনী ফলাফলের পর থেকেই নানাভাবে আমাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ৮মে রাতে বিজয়ী আব্দুল ওহাবের সমর্থক কামরুজ্জামান দয়ালের নির্দেশে কিশোরীর মামার দোকানে ভাংচুর চালিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয় বখাটেরা। হুমকি দেয়া হয় বাড়ি থেকে বিতারিত করার। সেই ঘটনার জেরেই শুক্রবার দিবাগত রাতে কিশোরীকে পরিকল্পিত ধর্ষণ করেছে তারা। নৃশংস এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন ভুক্তভোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে আনারস প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী ও সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, সন্তানতুল্য ওই কিশোরীকে এমন অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ, মনে হচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাই আমার অপরাধ হয়েছে। বিজয়ী প্রার্থী আব্দুল ওহাবের নির্দেশে তার কর্মী সমর্থকরা সুজানগরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। থানার অফিসার ইনচার্জ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধে পুলিশ তৎপর হলে এমন ঘটনা ঘটতো না।
তবে ধর্ষণের ঘটনার সাথে রাজনীতি বা নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি বিজয়ী চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল ওহাবের। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে শাহীন ও তার সমর্থকরা সব কিছুকেই নির্বাচনী সহিংসতা বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। পুলিশ অপরাধীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে, সেখানে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।
এ বিষয়ে সুজানগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে। নির্বাচন পরবর্তী আইন শৃংখলা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণেই আছে। সকল অভিযোগ আমলে নেয়া হচ্ছে, থানায় এ পর্যন্ত ১৪টি মামলা হয়েছে এবং আসামিদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, স্কুল শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বখাটে বারেকের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালেও ধর্ষণের অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী আত্মহত্যাও করেন। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে এলাকায় ইভটিজিং, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।