জাহাঙ্গীর হোসেন : পাবনা সদরের চাঞ্চল্যকর আত্মসমর্পনকৃত সর্বহারা নেতা আব্দুর রাজ্জাক হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ০৩ টি বিদেশী পিস্তল সহ ৫ জন আসামী গ্রেফতার।ঘটনাঃ নিহত মোঃ আব্দুর রাজ্জাক আত্মসমর্পণকৃত সর্বহারা নেতা।গত ইং ১৭/০৩/২০২৪ তারিখ রাত্রী অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় পাবনা জেলার সদর থানাধীন গয়েশপুর ইউপির হরিনারায়নপুর বটতলা মোড়ে (মানিক নগর বাজার) জনৈক বিল্টুর চায়ের দোকানে বসে চা পান করা অবস্থায় একটি মোটরসাইকেল যোগে তিনজন ব্যক্তি এসে ডিসিষ্ট মোঃ আব্দুর রাজ্জাক কে ৫/৬ রাউন্ড গুলি করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নিহত আত্মসমর্পনকৃত সর্বহারা নেতা আব্দুর রাজ্জাক এর ভাই মোঃ ইবকাল শেখ বাদী হয়ে ১৯/০৩/২০২৪ ইং তারিখে পাবনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।পাবনা জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আকবর আলী মুনসী মহোদয়ের নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ মাসুদ আলম, বিপিএম এর নেতৃত্বে ওসি ডিবি মোঃ এমরান মাহমুদ তুহিন, এসআই(নিঃ) বেনু রায়, কনস্টেবল মোঃ রিমন হোসেন, পিপিএম সহ ডিবির একটি চৌকশ টিম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী আসামীদের গ্রেফতারে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে গোপন সংবাদ এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডিএমপির গুলশান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী আসামী মোঃ ওহিদুল্লাহ (৪৫) কে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে আসামী মোঃ ওহিদুল্লাহ এর তথ্যের ভিত্তিতে পাবনা জেলার সদর থানা এলাকা হইতে হত্যাকান্ডে অংশগ্রহণ কারী অপর ২ আসামী মোঃ আকাশ (৩০) এবং মোঃ শোভন @ শুভ @ ভালা (২৮) দ্বয়কে আটক করা হয়।হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা জানায় হত্যাকাণ্ডে তারা তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তল ব্যবহার করেছে। ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র তিনটি আসামী মোঃ আঃ হান্নান, পিতাঃ মৃতঃ রুস্তম, সাং-চর সাধুপাড়া, থানা ও জেলাঃ পাবনা এর নিকট আছে।পরবর্তীতে আসামী মোঃ আঃ হান্নান কে গ্রেফতার করে তার বাসা হইতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। অপর একটি অস্ত্র সংক্রান্তে আসামী মোঃ আঃ হান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে জানায় যে, অপর আসামী মোঃ আঃ রহমান, পিতাঃ মোঃ কালু বিশ্বাস, সাং-চর শিবরামপুর, থানা ও জেলাঃ পাবনার নিকট পিস্তলটি বিক্রয় করেছে। পরবর্তীতে আসামী মোঃ আব্দুর রহমান এর নিকট হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বিদেশি পিস্তল এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী মোঃ ওহিদুল্লাহ এবং ভিকটিম আঃ রাজ্জাক একই এলাকার। পারিবারিক সূত্র ধরেই তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। পরবর্তীতে বাড়ি-ঘর ভাংচুর, মারামারি এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উভয়ের মধ্যে চরম শত্রুতা শুরু হলে ওহিদুল্লাহ নিজ এলাকা ছেড়ে শহরের সাধুপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতে শুরু করে। এরই জেরে ওহিদুল্লার এর মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং ভিকটিম আঃ রাজ্জাক কে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। এই নিখুঁত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হচ্ছে আত্মসমর্পনকৃত সর্বহারা নেতা আব্দুর রাজ্জাক হত্যা।ঘটনার দিন আসামি ওহিদুল্লাহ স্থানীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ করে তার অপর দুই সহযোগীদের নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে সাধুপাড়া থেকে মানিক নগর বাজারে যায় এবং সুযোগ বুঝে বিল্টুর দোকানে চা খাওয়া অবস্থায় উপর্যুপুরি গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।উদ্ধারকৃত আলামতের বর্নণাঃ১। তিনটি 7.65 বিদেশি পিস্তল।২। দুই রাউন্ড তাজা গুলি, যাহার একটির পিছনে 7.65 লেখা আছে, অপরটি 32AUTO লেখা আছে।৩। এক রাউন্ডঅবিস্ফোরিত গুলি।৪। ঘটনাস্থলের পাশে পড়ে থাকা ৬ রাউন্ড গুলির খোসা, যাহার প্রতিটির পিছনে 32AUTO লেখা আছে।(32AUTO গুলি 7.65 পিস্তলে ব্যবহার করা য়ায়)।
৫। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল।ধৃত আসামীদের নাম ঠিকানা: ১। মোঃ ওহিদুল্লাহ (৪৫), পিতাঃ মোঃ বক্কর প্রাং, সাং-হরিনারায়নপুর, থানাঃ পাবনা সদর, জেলাঃ পাবনা,২। মোঃ আকাশ (৩০), পিতাঃ মোঃ মহসিন রেজা, সাং-পশ্চিম সাধুপাড়া, থানাঃ পাবনা সদর, জেলাঃ পাবনা,
৩। মোঃ শোভন @ শুভ @ ভালা (২৮), পিতাঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম, সাং-পশ্চিম সাধুপাড়া, থানাঃ পাবনা সদর, জেলাঃ পাবনা
৪। মোঃ আব্দুল হান্নান (৪৮), পিতাঃ মৃতঃ রুস্তম প্রাং, সাং-চর সাধুপাড়া, থানাঃ পাবনা সদর, জেলাঃ পাবনা,৫। মোঃ আঃ রহমান (৩৫), পিতাঃ মোঃ কালু বিশ্বাস, সাং-চর শিবরামপুর, থানাঃ পাবনা সদর, জেলাঃ পাবনা
উল্লেখ্য যে, উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্তে পাবন সদর থানার মামলা নং-২৪ তারিখ০৮/০৪/২০২৪ ইং ধারাঃ The Arms Act, 1878এর 19A/19(f) রজু করা হয়েছে।