ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পরিত্যক্ত টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকিতে অব্যবহৃত অবস্থায় ডাকপ্লেগ রোগের ভ্যাকসিনের প্রায় পাঁচ শতাধিক ভায়াল ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিরুদ্ধে।
গত তিন সপ্তাহ আগে রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার নজরুল ইসলাম আকস্মিক ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে পরিদর্শনে এসে এই দৃশ্য দেখতে পান। তিনি বিষয়টি অবগত হয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার নাজমুল হোসাইনকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেয়েছেন।
সুবিধা ভোগীদের মাধ্যমে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেনারী হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে প্রাণিদের(হাস-মুরগি-গরু-ছাগল-ভেড়া- মহিষ) বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়ে থাকে। তেমনি গত ছয় মাস আগে ডাকপ্লেগ রোগের প্রায় পাঁচ শতাধিক ভ্যাকসিন প্রাণিসম্পদ ভবনের পেছনে থাকা টয়লেটের পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকে দেখতে পান এলাকার কিছু সুবিধাভোগি মানুষ। ওই সময় তারা ছবি তুলে সংরক্ষণ করে রাখেন।গত প্রায় তিন সপ্তাহ আগে রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকস্মিক ভাবে পরিদর্শনে আসলে ভ্যাকসিন ফেলে দেওয়ার বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন। তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাজমুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ঠ একটি তদন্ত কমিটি করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।তদন্ত কমিটির ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে ভেটেনারী হাসপাতালে আসা সরকারী বরাদ্ধের ভ্যাকসিন খামারিদের না দিয়ে কৌশলে বাইরে বিক্রি করে দেওয়ার মতো সুবিধাভোগীদের এমন গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। অভিজ্ঞ মহল ধারণা করছেন,কোনো কারণে ওই ভ্যাকসিনগুলো বিক্রি করতে না পারায় মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফেলে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর থেকে ভ্যাকসিন গুলো পরিত্যক্ত স্থানে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
পরিত্যক্ত অবস্থায় সন্ধ্যান পাওয়া ভ্যাকসিনের বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি ফিল্ড এ্যাসিসটেন্ট শাহিনুর ইসলাম(ভিএফ এ) বলেন, ফেলে দেওয়া ভ্যাকসিনগুলো আমি যোগদানের আগের। কিভাবে সেগুলো এসেছে বা কে ফেলেছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি যোগদানের পর যে সমস্ত ভ্যাকসিন এসেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান দপ্তরের স্টক রেজিঃ রয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রোমানা আকতার বলেন, আমি সম্পতি যোগদান করেছি। তাই বিষয়টি বিস্তারিত জানি না। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ ভ্যাকসিন ডাস্টবিনের ফেলার ঘটনায় তদন্ত চলছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ঈশ্বরদী উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হোসাইন বলেন, তদন্ত চলছে। শেষ হলে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হবে।