আবু হানিফ খাঁন : প্রায় তিনযুগ ধরে স্ত্রীর গাঁথা মালা বিক্রি করে চলে পাবনা বেড়া উপজেলার বাসিন্দা বৃদ্ধ জুলহাসের সংসার।
প্রতিদিন সকাল হলেই পাবনার কাশিনাথপুর ফুলবাগান ও এর আশপাশের হাটবাজার, বাসস্ট্যান্ডে দেখা মেলে প্রায় আশি ছুঁই ছুঁই এক বৃদ্ধের। হাঁটতে চলতে পারেন না ঠিকমত। লাঠিতে ভর করে চলেন কোনমতে। সারাদিন প্রচন্ড রোদ আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিক্রি করেন বকুল ফুলের মালা। কেউ তার কাছ থেকে মালা কিনেন সখের বসে আবার কেউ কিনেন দয়া দক্ষিণায়। তাই দিয়ে কোনমতে চলে অভাবী অসহায় বৃদ্ধ জুলহাসের টানাপোড়েনের সংসার। অসহায় এই ফুলের মালা বিক্রেতা জুলহাসের বাড়ি পাবনা বেড়া উপজেলার পুরান ভারেঙা ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামে।
ফুলের মালা বিক্রেতা বৃদ্ধা জুলহাসের সাথে আলাপ চারিতায় জানা যায়, প্রতিদিন ভোর বেলায় তার স্ত্রী ফজরের নামাজ শেষে আশপাশের এলাকার বিভিন্ন বকুল তলা থেকে ফুল কুরিয়ে আনেন এবং সেই ফুল দিয়ে নিজের হাতে মালা গেঁথে স্বামীর হাতে তুলে দেন বিক্রির জন্য। বৃদ্ধা জুলহাস পায়ে হেঁটে সারাদিন ঘুরে সেই মালা বিক্রি করেন বিভিন্ন হাটবাজার এবং বাসস্ট্যান্ডে। মালা বিক্রির টাকাতেই কোনমতে চলে তাদের সংসার।
পারিবারিক অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলেন, বয়সকালে গায়ে যখন শক্তি ছিল তখন ঘাড়ে করে হারিপাতিল বিক্রি করতাম এগ্রাম-ওগ্রামে। তখন মোটামুটি ভালোই চলতো সংসার। চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম হারিপাতিল বিক্রি করে। আর এক ছেলে আছে সেও বিয়ে সাদি করে আলাদা সংসার করেছে। ছেলের সংসারও তেমন ভালো চলে না। আমাদের খাওয়াবে কীভাবে।
কিন্তু খেয়ে পুরে তো আমাদের বাঁচতে হবে। নিজের নেই কোনো জায়গায় জমি। থাকি সরকারি জায়গায় ভাঙা ঘরে। অসুখ-বিসুখ হলে ওষুধ পানি কিছুই খেতে পারি না। এভাবে যে কয়দিন আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন।